আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং ভিসা খরচ ২০২৪, ইউরোপ মহাদেশের একটি উন্নত এবং শক্তিশালী রাষ্ট্র হচ্ছে আয়ারল্যান্ড। বর্তমানে বাংলাদেশের হাজারো শ্রমিক রয়েছে যারা আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় বিভিন্ন কাজের জন্য যেতে চায়। সাধারণত ইউরোপ মহাদেশের অন্যান্য দেশের তুলনায় এই আয়ারল্যান্ডে সব ক্যাটাগরির কাজের মান এবং কাজের বেতন অনেক বেশি। যদি আয়ারল্যান্ড কাজের জন্য চান তাহলে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে হবে কারণ আয়ারল্যান্ডে কাজের জন্য শুধু ওয়ার্ক পারমিট ভিসা রয়েছে।
আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার জন্য আরো কিছু ক্যাটাগরির ভিসা পেয়ে যাবেন তবে কাজের জন্য যেতে চাইলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে হবে। গত বছরে ১৮ হাজারের বেশি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার অনুমোদন দিয়েছিল কিন্তু চলতি বছরে এখনো কোন সার্কুলার প্রকাশ করা হয়নি। আবার অনেকের আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ এবং বেতন জানা থাকে না। তাই আজকের পোস্টে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং কাজের ভিসার খরচ তুলে ধরবো।
আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
প্রত্যেক বছরেই একটা নির্দিষ্ট সময়ে আয়ারল্যান্ডের সরকার আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় প্রচুর শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। সাধারণত যখন আয়ারল্যান্ডে কাজের চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা কম থাকায় আয়ারল্যান্ডের সরকার কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় শ্রমিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
তখন আপনারা খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে অল্প খরচে সরকারিভাবে আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সাধারণত দুই ধরনের আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায় একটি হলো আয়ারল্যান্ড জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং অপরটি হচ্ছে স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
-
জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা – যেকোনো কাজের অভিজ্ঞ লোকেরা এই আয়ারল্যান্ড জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। এই আয়ারল্যান্ড জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ইইউ নাগরিকদের জব বা কাজ করার অনুমতি দিয়ে থাকে। তবে আপনাদের জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য যোগ্য হতে আপনাকে কয়েকটি ধাপ বা উপায় অবলম্বন করতে হবে।
-
স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা – শুধুমাত্র দক্ষ-উচ্চ আন্তর্জাতিক কর্মীদের এই আয়ারল্যান্ড স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিয়ে থাকে। সাধারণত ক্রিটিকাল স্কিল এমপ্লয়মেন্ট পারমিটের অধীনে ন্যাচারাল, আইসিটি, সোশ্যাল সাইন্স, অধ্যাপনা, শিক্ষা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি শুধু এইসব ক্ষেত্রের বা এইসব বিষয়ের পেশাদাররা স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে।
আয়ারল্যান্ড কাজের ভিসা খরচ কত
বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষের স্বপ্ন ইউরোপ মহাদেশের কোন একটি দেশে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করবে। ইউরোপ মহাদেশের অন্যান্য দেশের তুলনায় এই আয়ারল্যান্ডের অবস্থা এবং কাজের মান অনেক ভালো। এজন্য হাজারো বাঙ্গালী আয়ারল্যান্ডে কাজের জন্য যেতে চায়। সাধারণত আয়ারল্যান্ডে কাজের জন্য যেতে চাইলে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে হবে। তবে আয়ারল্যান্ড এর কাজের ভিসা প্রসেসিং করার আগে ভিসার খরচ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।
কারণ সময়ের ব্যবধানে যখন ডলারের রেট কম বেশি হয় তখন ভিসার খরচও কম বেশি হয়। তবে আপনি যদি এম্বাসির মাধ্যমে কাজের ভিসা করতে চান তাহলে খরচ একটু কম হবে। আর যদি এজেন্সির মাধ্যমে কাজের ভিসা করতে চান তাহলে খরচ একটু বেশি হবে। এজন্য অনেকে আয়ারল্যান্ড কাজের ভিসার খরচ সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্য অনলাইনে অনুসন্ধান করে। তাই এখন আপনাদের মাঝে আয়ারল্যান্ড কাজের ভিসা প্রসেসিং খরচ কত তা বিস্তারিত তুলে ধরবো।
বর্তমানে যদি আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসার জন্য ভারতের এম্বাসির মাধ্যমে আবেদন করতে চান তাহলে ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা খরচ পড়বে। এছাড়াও যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসা করতে চান তাহলে ৬ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হবে। মূলত এম্বাসিতে ভিসা করতে একটু কম খরচ হয় আর এজেন্সিতে ভিসা প্রসেসিং করতে একটু বেশি টাকা খরচ হয়। তবে আপনাদের ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসার খরচ কম-বেশি হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ লিথুনিয়া কাজের ভিসা দাম কত ও বেতন কত
আয়ারল্যান্ড সর্বনিম্ন বেতন কত
চলতি বছরে যারা আয়ারল্যান্ড কাজের জন্য যেতে চাচ্ছে তাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আয়ারল্যান্ড সর্বনিম্ন বেতন কত। মূলত আয়ারল্যান্ডে কাজের ক্যাটাগরি এবং কাজের অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে বেতন দিয়ে থাকে। সাধারণত আয়ারল্যান্ডে সর্বনিম্ন বেতন হচ্ছে বাংলাদেশি টাকায় ৫০ হাজার টাকা। তবে যদি নতুন অবস্থায় কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে সর্বনিম্ন বেতন ৬০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়ে যাবেন।
আয়ারল্যান্ড কাজের বেতন কত
যারা আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসায় অর্থাৎ ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজের জন্য যেতে চাচ্ছে তাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আয়ারল্যান্ড কাজের বেতন কত বা বেতন কেমন। আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসায় কয়েকটি ক্যাটাগরির কাজ রয়েছে আর একেক ক্যাটাগরির কাজের বেতন একেক ভাবে নির্ধারণ করা থাকে। আপনার কাজের দক্ষতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করা থাকবে। সাধারণত আয়ারল্যান্ড কাজের সর্বনিম্ন বেতন হচ্ছে ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা।
তবে যদি কোন ব্যক্তি ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করে থাকে তাহলে প্রতিমাসে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার উপরে ইনকাম করতে পারবে। যারা নতুন অবস্থায় আয়ারল্যান্ড কাদের জন্য যাবে তারা ৬০ হাজার টাকার উপরে ইনকাম করতে পারবে। কিন্তু যদি কাজের উপর অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে নতুন অবস্থায় ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার উপরে ইনকাম করতে পারবে। মূলত আপনার কাজের ক্যাটাগরি এবং কাজের অভিজ্ঞতার ওপর সম্পূর্ণ বেতন নির্ভর করে।
বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যাওয়ার উপায়
বর্তমানে যারা আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় অথবা কাজের ভিসায় যেতে চাচ্ছে তাদের মধ্যে অনেকের আয়ারল্যান্ড যাওয়ার উপায় গুলো জানা থাকে না। সাধারণত আয়ারল্যান্ড কাজের জন্য যেতে চাইলে অবশ্যই আয়ারল্যান্ডের একটি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা থাকতে হবে। তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য সার্কুলার অনুযায়ী অনলাইনের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর ভিসা প্রসেসিং কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে বিমানের টিকেট কেটে নিলেই খুব সহজেই আয়ারল্যান্ড যেতে পারবেন।
শেষ কথাঃ
অনেকে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় অর্থাৎ কাজের ভিসায় কাজের জন্য যেতে চায় কিন্তু তাদের আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং আয়ারল্যান্ড কাজের ভিসা খরচ সম্পর্কে জানা থাকে না। তাই আজকের পোস্টে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য এবং কাজের ভিসা খরচ তুলে ধরেছি আশা করি আপনারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।