সারা বিশ্বের মধ্যে আরেকটি অন্যতম উন্নত দেশ হচ্ছে কুয়েত। অন্যান্য দেশের তুলনায় কুয়েত অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছে। কারণ অন্যান্য দেশের থেকে কুয়েতে টাকার মান সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও কুয়েতে সব ধরনের কাজে উন্নত মানের প্রযুক্তি বা যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এজন্য কুয়েতের শ্রমিকদের পরিশ্রম অনেক কম হয় এবং প্রতি মাসে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারে। এজন্য বাংলাদেশের হাজারো শ্রমিক রয়েছে যারা কুয়েত কোম্পানি ভিসা কাজের জন্য যেতে চায়।
এছাড়াও যখন কুয়েতে বিভিন্ন বড় বড় নির্মাণের কাজ শুরু হয় তখন কাজের চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা কম থাকায় কুয়েতের সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। সাধারণত আপনি কুয়েতে যাওয়ার জন্য কয়েকটি ক্যাটাগরির ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে বর্তমানে কুয়েতের অন্যান্য ভিসা সহ কুয়েত কোম্পানি ভিসা বের করা অনেক কঠিন এবং অনেক টাকা খরচ হয়। তবে প্রত্যেক বছর বোয়েসেল সরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
আপনারা বোয়েসেলের সাহায্য নিয়ে খুব অল্প টাকায় কুয়েত কোম্পানি ভিসা করে নিতে পারবেন। বেসরকারিভাবে দালালের মাধ্যমে কুয়েত কোম্পানি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন কিন্তু অনেক খরচ বেশি হবে। প্রত্যেক বছরের শুরুতে কুয়েতের বিভিন্ন কোম্পানি থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। তখন আপনারা কুয়েত কোম্পানি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাই আজকের পোস্টে কুয়েত কোম্পানি ভিসা সম্পর্কে তথ্য এবং কুয়েত ভিসা আবেদন করার নিয়ম গুলি তুলে ধরব।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা
বর্তমানে কুয়েতে যাওয়ার জন্য কয়েকটি ক্যাটাগরির ভিসা চালু রয়েছে। তবে কুয়েতের আরেকটি জনপ্রিয় ভিসা হচ্ছে কুয়েত কোম্পানি ভিসা। বাংলাদেশ থেকে যারা কুয়েতে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চায় তাদের মধ্যে অধিকাংশ শ্রমিক কুয়েতের কোম্পানি ভিসায় কাজের জন্য যেতে চায়। কারণ কুয়েতের কোম্পানিতে কাজে অনেক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় এবং প্রতি মাসে বেতনও অনেক বেশি পাওয়া যায়।
এজন্য বাংলাদেশ থেকে যারা কুয়েতে কাজের জন্য যেতে চাচ্ছে তাদের মধ্যে অধিকাংশ লোক কুয়েতের কোম্পানি ভিসায় বিভিন্ন কাজের জন্য যেতে চায়। তবে কিছু সংখ্যক মানুষ রয়েছে যারা জানতে চায় কুয়েতের কোম্পানি ভিসার মধ্যে কি কি ক্যাটাগরির কোম্পানির কাজ রয়েছে। তাই এখন আপনাদের জানাবো কুয়েত কোম্পানি ভিসার মধ্যে কি কি ক্যাটাগরির কোম্পানির কাজ রয়েছে।
- কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।
- ইলেকট্রনিক কোম্পানি।
- ড্রাইভিং কোম্পানি।
- হোটেল কোম্পানি।
- রেস্টুরেন্ট কোম্পানি।
- ফার্ম কোম্পানি।
- সার্ভিসিং কোম্পানি।
- শিল্প কারখানার কোম্পানি।
- এছাড়াও আরো কিছু কোম্পানি রয়েছে।
কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত
বর্তমানে কুয়েতে বিভিন্ন ধরনের কাজের কোম্পানি রয়েছে। আর একেক কাজের কোম্পানির বেতন একেক রকম ভাবে নির্ধারণ করা থাকে। এছাড়াও আপনার কোম্পানির কাজের ওপর যদি ভালো অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমানে কুয়েতে যেগুলো সাধারন কোম্পানী রয়েছে সেগুলো কোম্পানিতে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিয়ে থাকে।
কুয়েতে আরো উচ্চমানের বিভিন্ন কোম্পানি রয়েছে আর সেগুলো উচ্চ মানের কোম্পানিতে প্রতি মাসে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার উপরে বেতন দিয়ে থাকে। এছাড়াও যারা কুয়েত কোম্পানির প্রফেশনাল শ্রমিক এবং কাজ রয়েছে সেগুলো কাজের বেতন প্রতি মাসে ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার উপরে দিয়ে থাকে। যারা নতুন অবস্থায় শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কাজের উপর অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে ৬০ হাজার টাকার উপরে ইনকাম করা যায়।
আরো পড়ুনঃ কুয়েতে শ্রমিকদের বেতন কত ও কুয়েত ভিসার দাম কত
কুয়েত কোম্পানি ভিসার জন্য কি কি প্রয়োজন
কুয়েতে কোম্পানি ভিসায় যেতে চাইলে অবশ্যই একটি কোম্পানি ভিসা থাকতে হবে। তবে কুয়েতের কোম্পানির ভিসা পেতে চাইলে অবশ্যই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। কিন্তু আবেদন করার আগে জেনে নিতে হবে কুয়েত কোম্পানি ভিসার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন পড়ে। এজন্য অনেকেই অনলাইনে কুয়েত কোম্পানি ভিসার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা জানতে চায়। তাই এখন আপনাদের জানাবো কুয়েত কোম্পানির ভিসার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন।
-
একটি বৈধ পাসপোর্ট।
-
সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
-
জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
-
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সার্টিফিকেট।
-
চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত সনদপত্র ইত্যাদি।
কুয়েত ভিসা আবেদন
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে কুয়েত বিভিন্ন কোম্পানির কাজের জন্য যেতে চাইলে অবশ্যই একটি ভিসার প্রয়োজন পড়বে। তবে কুয়েত কোম্পানি ভিসা তৈরি করার জন্য ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। বর্তমানে যারা কুয়েত কোম্পানি ভিসার জন্য আবেদন করতে চাচ্ছে তাদের মধ্যে অধিকাংশ লোকের আবেদন করার সঠিক নিয়ম জানা নেই।
তবে কুয়েতের কোম্পানি ভিসার জন্য আবেদন করতে চাইলে অবশ্যই নিয়ম গুলি জানা থাকতে হবে কোন কিছু কারণ ভুল হলে ভিসা আবেদন বাতিল করে দেয়া হবে। এছাড়াও কিছু সংখ্যক মানুষ অনলাইনে কুয়েত কোম্পানি ভিসা আবেদন করার নিয়ম গুলি জানতে চায়। তাই এখন আপনাদের মাঝে কুয়েত ভিসা আবেদন করার নিয়ম গুলি তুলে ধরবো।
-
প্রথমে https://kuwait.mofa.gov.bd/ এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপর আপনার সামনে তথ্য প্রদান করার ফরম চলে আসবে আর সেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, পাসপোর্ট এর তথ্য ও কোম্পানির তথ্য ইত্যাদি প্রদান করতে হবে।
-
আবেদন ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করার পর সংগ্রহ করুন এবং সেটিকে প্রিন্ট করুন। আবেদন ফরমটির সাথে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন পাসপোর্ট কপি, ব্যবসায়ের লাইসেন্স ও ব্যবসায়িক নিবন্ধন সনদ এগুলো যুক্ত করে দিন। এরপর আপনাকে কুয়েতের এম্বাসিতে যাওয়ার জন্য নির্দেশন দিয়ে দিবে এবং সেখানে গিয়ে আবেদন ফরম এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র গুলো জমা দিয়ে ভিসার আবেদন কাজ সম্পন্ন করুন।
-
আবেদন ফরম এবং যোগ্যতা পরীক্ষা পরিপূর্ণ হওয়ার পর আপনার কুয়েত কোম্পানি ভিসা প্রদান করে দেওয়া হবে। এছাড়াও আপনারা বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমেও কুয়েত কোম্পানি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
শেষ কথাঃ
আজকের পোস্টে কুয়েতের কোম্পানি ভিসার যাবতীয় তথ্য এবং কুয়েতের কোম্পানির ভিসার আবেদন করার নিয়ম গুলি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা কুয়েতের কোম্পানি ভিসার যাবতীয় সব ধরনের তথ্য জানতে পেরেছেন।